রাজধানীর পল্লবীতে মাদকের টাকা ভাগাভাগি ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ফয়সালকে খুন করে কিশোর গ্যাং। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-মিরপুর বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে মোঃ শাহিন ওরফে নাডা শাহিন, মোঃ মুরাদ হোসেন, পারভেজ আহম্মেদ। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে ১টি চাপাতি, ১টি রামলা ও ১টি ছুরি উদ্ধার করা হয়।
এর আগে গত ১৮ মার্চ থেকে ২১ মার্চ পর্যন্ত ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে মোঃ ইয়াসিন, মোঃ সাইফুল ইসলাম ওরফে সাইমন, মোঃ নাসির উদ্দিন, মোঃ হৃদয় ওরফে ওমর সাফি ওরফে গন্ডার, মোঃ রাজিব মিয়া, শাহনেওয়াজ কাল্লু ও তানজিলাকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে পল্লবী থানা পুলিশ।
আজ শুক্রবার দুপুরে ডিএমপির ডিবি কম্পাউন্ডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
তিনি আরো বলেন, গত ১৬ মার্চ ভিকটিম মোহাম্মদ ফয়সাল ও তার বন্ধু মোঃ রানা ওরফে রানু এবং তার আরো ২ বন্ধু পল্লবী থানার ২নং কমিউনিটি সেন্টারে ইফতার শেষে রিক্সাযোগে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। পল্লবীর সেকশন-১২, ব্লক-সি, রোড় ১৩ এর সামনে পৌঁছা মাত্র আসামীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ফয়সালকে হত্যার উদ্দেশ্যে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম করে। রানা আসামীদের বাধা দিলে তারা রানাকেও রক্তাক্ত করে। ফয়সাল ও তার বন্ধুর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা চলে যায়। পরে ফয়সালের মা এসে দুইজনকে উদ্ধার করে আশপাশের লোকজনের সহায়তায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফয়সালকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বন্ধু রানা আশংকাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছে। এই ঘটনায় ফয়সালের বাবা মোঃ শাহাদাত হোসেন পল্লবী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরো বলেন, মামলাটি রুজুর পর পল্লবী থানা পুলিশ তদন্ত করেন। পরে বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে ডিবি মিরপুর বিভাগের ওপর তদন্তভার ন্যস্ত হয়। মামলাটি তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পলাতক আসামীদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। গত বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে রাজধানীর পল্লবী ও পটুয়াখালী জেলা থেকে শাহিন ও পারভেজকে গ্রেফতার করে পল্লবী জোনাল টিম ও মিরপুর জোনাল টিম। আজ শুক্রবার ভোরে অভিযান চালিয়ে মুরাদকে নেত্রকোনা থেকে গ্রেফতার করে ওই দুটি টিম।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামীরা এই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। মোঃ শাহিন ও তার বোন তানজিলার সাথে গত ১৫ মার্চ ভিকটিম ফয়সাল ও তার বন্ধুর মাদকের টাকা ভাগাভাগি ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে বিরোধ হয়। এ কারণে শাহিনসহ অন্যরা ফয়সালকে হত্যা করে।
গ্রেফতারকৃতদের পল্লবী থানার মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান গোয়েন্দা এ পুলিশ কর্মকর্তা।