বিশেষ-প্রতিনিধি:
সোমবার (০২ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন নবনিযুক্ত ডিএমপি কমিশনার। কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভা মিট দ্য প্রেস আয়োজন করে ডিএমপি।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি যাতে সন্ত্রাসীরা করতে না পারেন এবং কমিশনারকে সরাসরি অভিযোগ জানানো যাবে সেদিকে কঠোর নজরদারি থাকবে বলে জানিয়েছেন নবনিযুক্ত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।
ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র রাজধানীতে অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি হয়ে থাকে। আসছে নির্বাচনে যাতে কেউ বা কোনো সন্ত্রাসীগোষ্ঠী অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি করতে না পারে। অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধ করতে ডিএমপির পুলিশ সদস্যদের যথেষ্ট সাহস ও শক্তি রয়েছে। এটি আমাদের গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। এছাড়াও রাজধানীকে নিরাপদ রাখতে যা যা করা প্রয়োজন সবকিছুই করবে ডিএমপি।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন হচ্ছে এবং সর্বশেষ তেজগাঁও এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে নতুন কমিশনার হিসেবে আপনি কী ব্যবস্থা নেবেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, আপনারা জানেন যে জামিন একটি বিচারিক প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় একজন অপরাধী আদালত থেকে বিচার পেতে পারেন। কিন্তু পুলিশের তখনই করার থাকে যদি কোনো ব্যক্তি অপরাধে জড়িয়ে পড়েন বা অপরাধ করতে উদ্বুদ্ধ করে বা অপরাধ সংগঠন করে থাকেন। সেই ক্ষেত্রে আমি বলতে চাই, একজন অপরাধী ছোটই হোক বা বড়ই হোক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বদ্ধপরিকর। যারা জামিনে বেরিয়ে আসছেন তাদেরও কঠোর মনিটরিংয়ে রাখার জন্য পুলিশে সব ইউনিটে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের অন্যান্য ট্রেডিশনাল ক্রাইম থেকে একটু আলাদা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। পুলিশের নৈমিত্তিক কাজ চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই ও রাহাজানি ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করা এবং জনশৃঙ্খলা রক্ষা করা এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। কিন্তু ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে ক্রাইমের যে ধরন গতানুগতিক ধারা বদলে সেটি নতুন দিকে ধাবিত হচ্ছে। এর একটি বড় কারণ হলো দেশে ও সারা বিশ্বে প্রযুক্তির উন্নয়ন। চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই ছাপিয়ে আজ আমাদের নতুন সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে সাইবার ক্রাইম। এই সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে ডিএমপি বিভিন্ন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে ও বিভিন্ন কর্মপন্থা নিয়েছে।
ডিএমপির জনবল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের জনবল রয়েছে ৩৪ হাজার। সেটি যদি রাজধানীর দুই কোটি ২৪ লাখ জনগণের জন্য ভাগ করি তবে মহর অনুযায়ী আমাদের জনবল খুব কম। তারপরও ডিএমপির সদস্যরা যেভাবে কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে, দক্ষতার সঙ্গে অপরাধ দমন করে যাচ্ছে এতে আমি মনে করি, অন্যান্য মেট্রোপলিটন পুলিশের থেকে ডিএমপি অনেক দক্ষ ও যোগ্য। এমন কি বিদেশের সঙ্গে তুলনা করলেও ডিএমপি অনেক উন্নত বলে আমি মনে করি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এডিসি হারুন সম্পর্কে বলেন কেউ আইনের উর্ধ্বে না তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আমাদের হাতে আমরা রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
তিনি সাংবাদিকদের ওপর এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন,প্রথমে থানায় যাবেন যে কোন হয়রানির অথবা সমস্যার শিকার হলে থানায় যাবেন না হলে সরকারি পুলিশ কমিশনার অথবা অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার অথবা উপ পুলিশ কমিশনার তাও যদি সমাধান না হয়। তাহলে সরাসরি আমার সাথে যোগাযোগ করবেন আমি খুব শীঘ্রই একটি হট লাইন চালু করব এখানে আপনার মেসেজ দিতে পারবেন বাংলা ইংলিশ এবং ভয়েস রেকর্ড দিতে পারবেন।
আমরা ঢাকাকে যেকোনো উপায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি পুলিশের ঊর্ধ্বততম কর্মকর্তা ও সাংবাদিকবৃন্দ।