বিশেষ-প্রতিনিধি:
গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে নাটোর পুলিশ লাইন্সে এক সংবাদ সম্মেলনে নাটোরের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম জানান, বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার ভোররাত পর্যন্ত পাবনা ও সিরাজগঞ্জের জেলার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ ও অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের চৌকস সদস্যরা এ যৌথ অভিযান চালান।
নাটোর জেলা পুলিশ ও অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের টানা ৪৮ ঘণ্টার যৌথ অভিযানে ১৬টি চোরাই মোটরসাইকেলসহ আন্তঃজেলা ‘মোটরসাইকেল চোর চক্রে’র আট জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
চোর চক্রের গ্রেপ্তার সদস্যদের বিরুদ্ধে হত্যা, চুরিসহ বিভিন্ন থানায় ছয় থেকে সাতটি করে মামলা আছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
গ্রেপ্তাররা হলেন- বগুড়ার গাবতলীর পুরাদহ এলাকার বাদশা সরকারের ছেলে মো. দুলাল মিয়া, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের পাখাইলকান্দির মোজাফর আলী আকন্দের ছেলে মো. আইয়ুব আলী, পাবনার আমিনপুরের সৈয়দপুর এলাকার মো. হিরু খানের ছেলে মো. শামীম খান ও কালিনগর এলাকার এরশাদ আলীর ছেলে নাছির উদ্দিন, রাজশাহীর এয়ারপোর্ট থানার বাইয়া এলাকার মো. শামীম বাবুর ছেলে মো. আল-আমিন ইসলাম যার বর্তমান ঠিকানা পাবনা বেড়ার নতুন বারেঙ্গা এলাকা, পাবনার বেড়ার শ্রীকন্ঠদিয়া এলাকার সোলেমান শেখের ছেলে মো. খবির শেখ, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর বাতিয়া এলাকার আব্দুল জলিল মণ্ডলের ছেলে মো. বাচ্চু মিয়া এবং পাবনা আতাইকুলা চুলকাটা এলাকার মিনহাজ উদ্দিনের ছেলে মো. জিয়াম হোসেন জিম।
পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম জানান, উদ্ধার করা মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন ও চ্যাসিস নম্বর দেশের সব থানায় মেসেজ দিয়ে দেওয়া হবে। যাদের মোটরসাইকেল মিসিং আছে, তারা বৈধ কাগজ-পত্র নিয়ে যোগাযোগ করে মোটরসাইকেল ফিরিয়ে নিতে পারবেন।
তিনি আরও জানান, কিছু দিন আগে নাটোরের সিংড়ার সিংড়াপাড়া এলাকার মো. ওসমান গণির ধান শুকানো খোলা থেকে লাল-কালো রংয়ের একটি ডিসকভার একশ পঁচিশ সিসি মোটরসাইকেল চুরি হয়। তিনি খোঁজাখুজি করেও মোটরসাইকেলটি না পেয়ে সিংড়া থানায় মামলা করেন।
“এরপর সিংড়া থানার পুলিশের একটি চৌকস টিম চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার এবং জড়িতদের আটকে কাজ শুরু করে। আমি এ ব্যাপারে পুলিশের বিশেষ ইউনিট অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটকে (এটিইউ) সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করি।”
তিনি জানান, সিংড়া থানার চৌকস টিম এবং অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের একটি চৌকস দল অভিযান চালিয়ে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বাতিয়া এলাকা থেকে মামলার চোরাই মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে।পরে আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল চোর চক্রের আটক আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যে সিরাজগঞ্জ, পাবনার বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৫টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। এ অভিযান পরিচালনায় পাবনা ও সিরাজগঞ্জের থানা-পুলিশের সম্পূর্ণ সহযোগিতা আমরা পেয়েছি।“
এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা তারিকুল বলেন, “একেকটা মোটরসাইকেল তিনটা হাত বদল হয়েছে। আটকরা তিনটা টায়ারে কাজ করে। শুরুতে একটি দল মোটরসাইকেল চুরি করে অন্য দলের কাছে হাতবদল করে দেয়। পরে তারা আরেকটি দলের কাছে পাঠিয়ে দেয়।
“এই এলাকার মোটরসাইকলে চলে যাচ্ছে অন্য এলাকায়, অন্য এলাকার মোটরসাইকেল চলে আসছে এই এলাকায়। দেশব্যাপীই এই মোটরসাইকেল চোর চক্রের একটা নেটওয়ার্ক আছে। ”
পুলিশ সুপার জানান, মোটরসাইকেল চুরির ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আইনগত প্রক্রিয়া চলমান ।
সংবাদ সম্মেলনে অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আখিউল ইসলাম, নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এ.টি.এম মাইনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. শরিফুল ইসলাম, সিংড়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আকতারুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। সূত্র:বাংলাদেশ পুলিশ নিউজ