স্টাফ রিপোর্টার:
দুর্ঘটনার শিকার ক্যাবল কারটি ছয় শিশু শিক্ষার্থীসহ ৮ আরোহী নিয়ে একটি গভীর পার্বত্য উপত্যকায় ঝুলে আছে।
সড়ক যোগাযোগ না থাকায় প্রতিদিন পার্বত্য স্কুলটির প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এই ক্যাবল কার। আজ মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সকালে স্কুলে যাওয়ার সময় একটি ক্যাবল কারে ওঠে ছয় শিক্ষার্থীসহ ৮ জন। তবে গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই মাঝপথে প্রায় তিন হাজার ফুট উচ্চতায় এর দুটি তার ছিড়ে যায়। এতে অনেকটা ঝুলে পড়ে কারটি। আতঙ্কে সজ্ঞা হারিয়ে ফেলে কয়েক জন। তাদের সঙ্গে থাকা পানীয় শেষ হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখওয়া প্রদেশের একটি গভীর পার্বত্য উপত্যকায়। সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত বাত্তাগ্রাম জেলার আল্লাই তেহশিলে ঘটনাটি ঘটে। ছয় স্কুলশিশু ও দুই স্থানীয়কে নিয়ে ক্যাবল কারটি গন্তব্যের পৌঁছানোর আগেই মাঝপথে এর দুটি তার ছিড়ে যায়।
তারপর থেকে ক্যাবল কারটি এর আরোহীদের নিয়ে উপত্যকাটির ১২০০ ফুট উপরে ঝুলে আছে। তাদের উদ্ধারে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কুইক রেসপন্স ফোর্সকে তলব করা হয়েছে এবং ঘটনাস্থলে স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপ (এসএসজি) এর কমান্ডোদের মোতায়েন করা হয়েছে, জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যম ডন।
আল্লাইয়ের সহকারী কমিশনার জাওয়াদ হুসেইন জানিয়েছেন, সামরিক বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার ১৫টি মিনিট ধরে পরিস্থিতি জরিপ করে গিয়েছে আর রেসক্যু ১১২২ টিম ক্যাবল কারটির নিচে জাল পাতার চেষ্টা করছে।
আল্লাই তেহশিলের চেয়ারম্যান মুফতি গুলামুল্লাহ জানিয়েছেন, পার্বত্য এলাকার লোকজন ওই এলাকায় থাকা কয়েকটি পাহাড়ি নদী পার হওয়ার জন্য ব্যক্তি উদ্যোগে স্থাপিত ও পরিচালিত ওই ক্যাবল কার ব্যবহার করে। তাদের চলাচলের জন্য রাস্তা বা সেতুর মতো বিকল্প কোনো কিছু নেই।
প্রাদেশিক দমকল বাহিনীর কর্মকর্তা আব্দুল বাসিত খান জানিয়েছেন, ক্যাবল কারটি এখন একটি মাত্র তারের ওপর নির্ভর করে ঝুলে আছে।
ক্যাবল কারটিতে থাকা গুলফরাজ (২০) নামের এক আরোহী ফোনে জিও নিউজকে জানিয়েছেন, আটকে পড়া শিশুদের সবার বয়স ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে একজন গত তিন ঘণ্টা ধরে সজ্ঞা হারিয়ে ফেলে। তিনি জানান, তাদের কাছে কোনো খাবার এমনকি পান করার মতো পানিও নেই। তাদের এলাকার লোকজন নিকটবর্তী পাহাড়ে ভিড় করেছে আর কাঁদছে।
“খাবার পাবো কই? পান করার মতো পানি খুব দরকার। মোবাইলের চার্জও ফুরিয়ে যাচ্ছে,” বলেছেন তিনি।
পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনওয়ারুল হক কাকার আটকে পড়া শিশু ও অন্যান্যদের অবিলম্বের উদ্ধার করার জন্য কর্তৃপক্ষগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে রেডিও পাকিস্তান।