ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিএমপি) পুলিশের সাবেক যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) বিপ্লব কুমার সরকার ও ডিএমপির ট্রাফিকের (দক্ষিণ) যুগ্ম পুলিশ কমিশনার এস এম মেহেদী হাসানকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখা থেকে জারি করা পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে সই করেন সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণি।
রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পৃথক আদেশে পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের এই দুই যুগ্ম কমিশনারের হদিশ মিলছে না। মৌখিক বা লিখিতভাবে না জানিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় পরদিন ৬ অগাস্ট থেকে তাদের সাময়িক বরখাস্ত দেখানো হয়েছে।
দুজনেরই আদেশে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ২ (চ) বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
ওই বিধিতে পলায়নের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে-“বিনা অনুমতিতে চাকুরি ত্যাগ করা অথবা ৬০ (ষাট) দিন বা তদূর্ধ্ব সময় বিনা অনুমতিতে কর্ম হইতে অনুপস্থিত থাকা অথবা কর্ম হইতে অনুমোদিত অনুপস্থিতির ধারাবাহিকতায় অনুমোদিত সময়ের অতিরিক্ত ৬০ (ষাট) দিন বা তদূর্ধ্ব সময় পুনঃঅনুমতি গ্রহণ ব্যতিরেকে অনুপস্থিত থাকা অথবা বিনা অনুমতিতে দেশ ত্যাগ এবং ৩০ (ত্রিশ) দিন বা তদূর্ধ্ব সময় বিদেশে অবস্থান করা অথবা অনুমতিসহ দেশ ত্যাগ করিবার পর অনুমোদিত সময়ের অতিরিক্ত ৬০ (ষাট) দিন বা তদূর্ধ্ব সময় অননুমোদিতভাবে বিদেশে অবস্থান করা।”
আদেশে বলা হয়েছে, সাময়িক বরখাস্তকালে বিপ্লব কুমার সরকার বরিশাল রেঞ্জে এবং মেহেদি হাসান সিলেট রেঞ্জে সংযুক্ত থাকবেন। বিধি অনুযায়ী তারা খোরপোষ ভাতা পাবেন।
২১তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে চাকরি নেওয়া বিপ্লব সরকার ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের জগন্নাথ হল শাখার সাধারণ সম্পাদক। পুলিশের চাকরিতে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রায় পুরোটা সময় তিনি দাপুটে কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
২০১১ সালের ৬ জুলাই বিএনপির কর্মসূচি চলাকালে বিরোধী দলের চীফ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুক সংসদ ভবনের সামনে পুলিশের পিটুনির শিকার হন। সেসময় তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার হারুন অর রশীদ এবং অতিরিক্ত উপ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার ওই ঘটনার নেতৃত্ব দেন।
জয়নাল আবেদীন ফারুককে ধাওয়া করে জামা খুলে নেওয়ার একটি ভিডিও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ছাপা হলে তা ভাইরাল হয়। এরপর থেকে বিপ্লব ও হারুনের প্রভাব পুলিশ বিভাগে ছড়িয়ে পড়ে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগ মুহূর্তে ৩১ জুলাই ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লবকে প্রশাসন এবং গোয়েন্দা (ডিবি) দক্ষিণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।