ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম বলেছেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) গত ৪৫ বছর ধরে গর্বের সাথে নগরবাসীকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। আগামীতেও আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে সেবা প্রদানের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
আইজিপি গতকাল রবিবার বিকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্সে সিএমপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী ডা. তৈয়বা মুসাররাত জাঁহা চৌধুরী। সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বিপিএম-বার, পিপিএম-বারসহ স্থানীয় সংসদ সদস্য, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক ও বর্তমান ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, জনপ্রতিনিধি এবং নগরীর গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আইজিপি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য দেশের সকল সংকটময় মুহূর্তে দায়িত্ব পালনে সবসময় অবিচল থেকেছে। তারা বঙ্গবন্ধুর আহবানে সাড়া দিয়ে আমাদের স্বাধীনতালগ্নে প্রথম বুলেট নিক্ষেপ করেছিল। বঙ্গবন্ধু ভবনেও পুলিশ নিজের জীবন দিতে দ্বিধা করেনি।
সিএমপির সদস্যরা নগরীর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, আগামীতেও নগরবাসীকে সেবা দিয়ে তাদের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জনের প্রত্যয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বাংলাদেশ পুলিশের জনবল বৃদ্ধি, সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ পুলিশের প্রায় এক লক্ষ জনবল বাড়ানো হয়েছে। এ বর্ধিত জনবলের কারণে আমরা কার্যকরভাবে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছি।
আইজিপি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা গ্রহণের আগে দেশে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ কিভাবে আখড়া বেঁধেছিল। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ছিল সন্ত্রাসের জনপদ। একসাথে ৬৩ জেলায় বোমা হামলা করে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের হোলি খেলা চলছিল। একটি মহল বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র করার অপচেষ্টা চালাচ্ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক উদ্যোগে বাংলাদেশ পুলিশ জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ দমনে ঈর্ষণীয় সাফল্য দেখিয়েছে।
তিনি বলেন, একসময় ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটন করা কঠিন ছিল। আমরা তথাকথিত সোর্স নির্ভর ছিলাম। আজ পুলিশ দ্রুততম সময়ে ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটন করছে।
তিনি বলেন, দেশে স্থিতিশীল আইন-শৃঙ্খলা বজায় থাকার কারণে মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২০৪১ সালে আমরা উন্নত-স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
আইজিপি আশা প্রকাশ করে বলেন, চট্টগ্রামের সম্মানিত নগরবাসী পুলিশকে তাদের দায়িত্ব পালনে যেভাবে সহযোগিতা করেছেন আগামী দিনেও তা প্রসারিত থাকবে।
এর আগে আইজিপি আজ সকালে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানাধীন ডাঙ্গার চরে নবনির্মিত নৌ তদন্ত কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। তিনি নৌ তদন্ত কেন্দ্রের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন এবং পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বিপিএম-বার, পিপিএম-বার, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা বিপিএম(বার), পিপিএম, চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার এস. এম. শফিউল্লাহ এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ ও রেঞ্জের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।